আজকাল বেশিরভাগ বর্তমান জেনারেশনের একটা সমস্যা আছে। আর সেটা হলো, এরা সবাই রিলেশনশিপের জন্য পাগল। এরা বলে তাদের নাকি সত্যিকারের প্রেম হয়ে গেছে!
তাহলে আমি আপনাকে বলতে চাই, এই পৃথিবীতে প্রেম ভালোবাসা বলে কিছু হয় না। আর যদি সেটা হয়ও, তবে তার সংখ্যাটা খুবই কম। তাই আজকাল যা কিছু হচ্ছে, এটা কেবলমাত্র “এট্রাকশন”।
“এট্রাকশন” ন্যাচারাল একটা জিনিস। আপনি ছেলে হলে মেয়ের প্রতি হবে আর মেয়ে হলে ছেলের প্রতি হবে। আর এই এট্রাকশনকে আমরা না বুঝে ভালোবাসা নাম দিয়ে দিই।
সত্যি বলতে কি, কেউ যদি আপনাকে বলে সে আপনাকে সত্যিই ভালোবাসে, সে ডাহা মিথ্যা কথা বলে! আমার কথা বিশ্বাস না হলে আপনি নিজেই সেটা পরীক্ষা করে দেখুন।
যেমন, আপনি তাকে বলুন আপনার শরীর অসুস্থ এবং আপনি আর বেশি দিন বাঁচবেন না। দেখবেন কিছুদিন পরে সে আপনাকে কোনো না কোনো অজুহাতে ছেড়ে চলে যাবে । কিন্তু একই কথা আপনি আপনার বাবা মাকে বলে দেখুন, যদি প্রয়োজন হয়, তারা আপনার জন্য নিজেদের বিক্রি করে দিবে। আর এটাই হচ্ছে “রিয়েল লাভ”।
আজকাল লোক “এট্রাকশনকে” লাভ মনে করছে। আর এর জন্য নিজের জীবনকেও নষ্ট করে ফেলছে। আপনার ক্যারিয়ার ছেড়ে যদি আপনি অ্যাফেয়ারের পেছনে ছোটেন, তাহলে আপনার জীবনটাই নষ্ট হয়ে যাবে। আপনি যে সম্পর্ক তৈরি করেন স্কুল, কলেজ কিংবা কোচিংয়ে, এসব কখনোই পারমানেন্ট কিছু না!
আপনি যদি আপনার গার্লফ্রেন্ড বা বয়ফ্রেন্ডকে বিয়ে করেন, তাহলে সেটা আপনার জন্য সর্বোচ্চ “বেস্ট অপশন” হবে। কিন্তু আপনার বাবা মা যাকে পছন্দ করবে, সেটা আপনার জন্য হবে “ইউনিক”। যদি আপনি বেস্ট পছন্দ করেন, তবে আপনি ক্লাসের ফার্স্ট বয় বা গার্ল হবেন আর যদি ইউনিক পছন্দ করেন, তাহলে আপনি লাখে একজন হবেন। আরেকটা কথা, অধিকাংশ প্রেমের বিয়ের পরিণতি ভালো কিছু হয় না। দুদিন পরে যদি আপনার লাইফ পার্টনার আপনাকে ছেড়ে চলে যায়, আপনি কাউকে কিছু বলতেও পারবেন না, কারণ পছন্দ তো আপনি করেছিলেন।
তাই যদি ভালোবাসতেই হয়, তবে আপনার বইকে ভালোবাসুন, আপনার কাজকে ভালোবাসুন। কারণ, এরা আপনাকে কখনোই ধোঁকা দেবে না, কিছু না কিছু অবশ্যই দিয়ে যাবে যা দিয়ে আপনি জীবন গড়তে পারবেন।
দিন সবার জন্যই ২৪ ঘন্টার হয়। এমন না যে কেউ আলাদা করে সময় পায়। কিন্তু এই ২৪ ঘন্টায় কেউ ভালোবেসে “পতি” হতে চায়, আবার কেউ পরিশ্রম করে “কোটিপতি” হতে চায়। এখন আপনিই ভেবে দেখুন, আপনি কি হতে চান?
কিছু বছর পর যখন আপনি লোকজনের মুখোমুখি হবেন, তখন তারা এটা জিজ্ঞেস করবে না যে, আপনার কয়টা গার্লফ্রেন্ড বা বয়ফ্রেন্ড ছিল। তারা এটাই জিজ্জাসা করবে আপনি কত টাকা রোজগার করেন? আপনার যোগ্যতা কতটা?
এটাই পৃথিবীর নিয়ম! লোক কখনই আপনার অবস্থা জিজ্ঞেস করবে না, তারা আপনার আর্থিক অবস্থা জিজ্ঞেস করবে।
আজকাল ছেলেমেয়েরা প্রমিস করে — “আমি তোমার সাথে সারা জীবন থাকবো!” কিন্তু সত্যিটা হলো, কেউ কারো সাথে সারাজীবন থাকে না। লোক যখন শেষ যাত্রায় যায়, তখনও কাঁধ অদল বদল করে নিয়ে যায়!
আর তাই এখন যদি আপনি মাথা নিচু করে পড়ার টেবিলে পড়ে থাকেন, কিছুদিন পর আপনার মাথা সবার উপরে থাকবে। আর এখন যদি আপনি আরামের কথা ভাবেন, তাহলে সারাজীবন কষ্ট সহ্য করতে হবে। আজ যদি আপনি আপনার বইকে এবং কাজকে ভালোবাসেন, তাহলে কাল মানুষ আপনাকে সম্মান করবে। তাই কোনো ড্রিম গার্ল বা ড্রিম বয়ের জন্য কখনো নিজের বাবা মায়ের স্বপ্নকে নষ্ট করবেন না!
আজ আপনি দুই চারটা প্রেম করে যেটাকে সুখী হওয়া মনে করছেন, সেটা আসলে কোনো সুখ নয়। সত্যি বলতে কি, আপনি এখনও আসল সুখ দেখেনইনি!
সুখী আপনি কবে হবেন জানেন? যেদিন আপনি প্রথম স্যালারি পাবেন কিংবা আপনার বিজনেস শুরু করবেন। (সেটাও কিন্তু আসল প্রকৃত সুখ নয়) কিন্তু যখন আপনি আপনার প্রথম ইনকাম নিয়ে গিয়ে বাবা মায়ের হাতে তুলে দেবেন, তখন আপনার চোখে অশ্রু আসবে। তখন আপনি ফিল করবেন —
যেই বাবা মায়ের আঙুল ধরে আমি হাঁটতে শিখেছি, সেই বাবা মায়ের হাতেই আমি আমার প্রথম ইনকাম তুলে দিয়েছি! আর ঠিক তখনই আপনি সত্যিকারের সুখটা ফিল করবেন!
আর যখন আপনি ইনকাম করা শুরু করবেন, তখন আপনি এটাও বুঝতে পারবেন — লক্ষ টাকারও কোনো মূল্য নেই সেই দশ টাকার কাছে, যা আপনার বাবা মা স্কুলে যাবার সময় আপনার হাতে দিত।
একটু ভালোভাবে বাবা মায়ের চোখের দিকে তাকিয়ে দেখুন — ওটাই হলো সেই আয়না, যেখানে সন্তান কখনো বৃদ্ধ হয় না।কালেকশন
সংগৃহীত
